অনেকগুলো ভিন্ন ধরনের পেপার নিয়ে স্টাডি করলে এমনিতেই পেপারের ফরম্যাট এবং সেকশনগুলো নিয়ে ভালো ধারনা হয়ে যাওয়ার কথা। আমাদেরও উচিৎ পেপার লেখার ক্ষেত্রে কিছু স্ট্যান্ডার্ড এবং নিয়মনীতি মেনে চলা।
তাই আমি শুধু সংক্ষেপে পেপারগুলোতে ব্যবহৃত খুবই কমন কিছু টার্ম এবং পয়েন্ট সম্পর্কে আলোচনা করবো- (সেকশনগুলোর নাম আমি আমার মত করে দিয়েছি। এরচেয়ে কম, বেশি বা ভিন্ন নামে, ভিন্ন কনটেন্ট নিয়েও সেকশন হতে পারে)
এবস্ট্রাক্টকে সারমর্মও বলা চলে। আমি সম্পূর্ণ পেপারে যা লিখবো তার একটি সংক্ষিপ্ত রূপ হল এই এবস্ট্রাক্ট সেকশন। আমার কাজের মোটিভেশন, ফাইলান আউটপুট, টুলস টেকনিক এবং কাজের একুরেসি- এই সবই খুবই অল্প কথায় এবস্ট্রাক্ট এর অন্তর্ভুক্ত করতে হয়। যাতে করে এবস্ট্রাক্ট পড়েই একজন পাঠক পুরো কাজ সম্পর্কে মোটামুটি ধারনা পেতে পারে।
পেপারের এই অংশটিতে মূলত এবস্ট্রাক্টক অংশের কিছু পয়েন্টের বিস্তারিত বিশ্লেষন করা হয়। এখানে লেখার মাধ্যমে আপনাকে প্রমান করতে হবে কেন আপনার এই কাজ ভিন্ন এবং প্রয়োজনীয়। আপনি হয়তো পরিবেশের কোনো একটি সিচুয়েশন থেকে এই কাজটি করবেন ভেবেছেন এবং সলিউশন খুজে পেয়েছেন- তাহলে সেটিও লিখে ফেলতে পারেন এই সেকশনে।
এবস্ট্রাক্টের মত এই সেকশনে কোনো ওয়ার্ড লিমিট নাই। তাই এখানে বিস্তারিত লেখার মাধ্যমে আপনার কাজের পজিটিভ দিকগুলো সুন্দরমত পাঠকের কাছে তুলে ধরতে পারেন।
এই অংশটাকে রিলেটেড ওয়ার্কস বা আমার কাজের একই ফিল্ডের অন্যান্য মানুষের কাজের একটা লিস্ট বলা চলে। এটা লিখতে হয় মূলত পাঠকদের সুবিধার কারনেই, যাতে করে তারা একই টাইপের কাজের সাথে আমার পেপারকে রিলেট করতে পারে। আর অনেকগুলো পেপার পড়ে আমার পেপারের লিটারেচার রিভিউ লিখতে বসলে আমারও জ্ঞানের পরিসর বৃদ্ধি পাবে। সেজন্যই এই অংশটি পেপারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সেকশন।
লিটারেচার রিভিউ অংশ থেকে অনেক বেশি রেফারেন্স পাওয়া যায় সাধারণত, যা একটা পেপারের ভেলু আরও অনেক বৃদ্ধি করে।
প্রতিটা কাজেরই মূল কাজের আগে কিছু কাজকর্ম থাকে যা মূল কাজের পূর্বে রেডি করে রাখতে হয়। পেপারে এই নামে বা এমন কনটেন্ট নিয়ে একটা সেকশন করা যেতে পারে যেখানে মুল কাজ, এলগোরিদম বা মডেল বানানোর পূর্বের কিছু প্রসিডিউর বা ব্যাকগ্রাউন্ড লেখা যেতে পারে।
যেমন- মেশিন লার্নিং, ডিপ লার্নিং নিয়ে কাজ করলে সেখানে ডেটাসেট নিউরাল নেটওয়ার্কে ইনপুট দেয়ার আগে বিভিন্ন ধরনের প্রসেসিং, অ্যাট্রিবিউট পরিবর্তন নিয়ে কাজ করতে হয়। এসকল কাজের বর্ণনা সাধারণত এই সেকশনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়ে থাকে।
একটা পেপারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেকশন হল এই মেথোডলজি। যেখানে কাজের টেকনিক সম্পর্কে বিস্তারিত লেখা হয়। এখানেই মূলত কাজের বর্ণনা, কিভাবে করেছি, কিসের মাধ্যমে করা হয়েছে, কাজের ভ্যালিডেশন এবং ভিন্নতা এসব নিয়েই ধাপ অনুযায়ী বিস্তর আলোচনা করতে হয়।
এখানে যতটা সম্ভব টেবিল, চার্ট, ফিগার, গ্রাফ, ইকুয়েশন দিয়ে ব্যাপারগুলো সুন্দরমত উপাস্থাপন করাটা ভালো।
পেপারের এই সেকশনটাতে সম্পূর্ণ কাজের এফিসিয়েন্সি নিয়ে আলোচনা করা হয়। কোনো কাজের একুরেসি এবং কোয়ালিটি নিয়ে বলতে হয়। এবং এগুলো কিভাবে, কিসের সাথে কমপেয়ার করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে সে সম্পের্কে বিস্তারিত লিখতে হয়।
সম্ভব হলে এই সেকশনটিতে কিছু গ্রাফ বা টেবিলের মাধ্যমে রেজাল্ট রিপ্রেজেন্ট করা উচিৎ।
এখানে সম্পূর্ণ কাজের একটি ইতি টানতে হয়। এবং যতটুকু কাজ আপাতত করা হয়েছে এর পরবর্তী কাজের প্ল্যান, আর কি করা যেতে পারে বা এই প্রোজেক্ট নিয়ে ফিউচার প্ল্যান কি এসব নিয়ে আলোচনা করতে হয়।
রেফারেন্স হল সেইসকল কনটেন্ট বা পেপার- আমি যেগুলোর সাহায্য নিয়েছি এই পুরো কাজে এবং লেখার প্রয়োজনে। একটা কথা খেয়াল রাখতে হবে, রেফারেন্স বেশি দিলে বা অন্যের কাজ থেকে সাহায্য নিলে কখনো কোনো পেপারের ভেলু কমে যায়না, বরং আরও বাড়ে। তাই বেশি রেফারেন্স এড করলে পেপারের ওয়েট আরও বৃদ্ধি পাবে। ভালো ভালো পেপার বা কাজের রেফারেন্স দেয়া এবং পাঠককে কনটেন্ট বুঝতে সাহায্য করা পেপার লেখার ক্ষেত্রে অনেক ভালো প্র্যাকটিস।